দেশজুড়ে: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ও দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা। তাদের অপসারণ করার জন্য ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বুধবার (১০ জানুয়ারি) বনানী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থীরা বিক্ষোভ করেন। তাদের বিক্ষোভে যোগ দেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা ও সাইদুর রহমান টেপা। এর আগে জাতীয় পার্টির নেতারা বনানী কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে কার্যালয়ের সামনে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। দলের কো-চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান টেপা বলেন, পার্টি অফিসে নেতা-কর্মীরা সব সময়ই আসবে। আমরা দলীয় বিষয়ে কথা বলবো, এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে পুলিশ গেট বন্ধ করে রেখেছে।
জাপার নেতাকর্মীদের কার্যালয়ে যেতে বাধা দেওয়ার প্রসঙ্গে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাহান হক বলেন, তারা তাদের পার্টি অফিসে ঢুকবে এতে আমাদের বাধা দেওয়ার কিছু নেই। তবে, শৃঙ্খলা রেখে তারা ঢুকবেন এটাই প্রত্যাশা। আমরা শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এখানে অবস্থান করছি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বা মহাসচিবের পক্ষ থেকে পুলিশকে নিরাপত্তার বিষয়ে আহ্বান জানানো হয়নি বলেও জানান কাজী সাহান। কো-চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বাবলা বলেন, নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অনেক জায়গা থেকে টাকা পেয়েছে শুনেছি। সেটা চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও চুন্নু সাহেব মেরে দিয়েছেন। আমরা এটা নিয়ে দলীয়ভাবে তদন্ত করবো। তারপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে সাইদুর রহমান টেপা বলেন, আপনারা দেখেছেন এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। দলের যিনি চেয়ারম্যান তার সঙ্গে প্রার্থী মনোনয়ন প্রশ্নে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু তিনি পার্টির মধ্যে বিভক্তি করতে দেননি। অথচ পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গত ৪ বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা এবং অদক্ষতার কারণে পার্টিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।
তিনি দাবি করেন, পাটির প্রার্থীদের সঙ্গে চরম বিশ্বাসাঘাতকতা, প্রতারণা করা এবং তাদের এক প্রকার পথে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। সরকারের কাছে ধর্ণা দিয়ে ২৬টি আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম জাতীয় পার্টিকে এতটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির কারণে চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু সে বোধোদয়ও তাদের হয়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা পার্টির সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের মনোভাব জানতে পেরেছি। তারা পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দেখতে চান। এম অবস্থায় জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করা এবং পার্টির ঐক্য বজায় রাখার জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া সময় যেসব অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারি হয়েছে এবং ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান টেপা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন, আগামীতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এই মূহূর্তে পার্টিকে সুসংগঠিত করে একটি জাতীয় সম্মেলন করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |