
হেড লাইন: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের বাঁশগাড়িতে সাবেক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের আরো ১০ জন।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ৮টার দিকে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে গোলাগুলি। নিহত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোমেন আলম (১৯)। তিনি বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা। আহতরা হলো একই ইউনিয়নের চান্দেরকান্দি এলাকার মো. রুবেল মিয়া (২৫), দিঘলিয়াকান্দি এলাকার মো. আল আমিন (২৭) ও আল আমিন (১৮)। অন্যদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, দুটি পক্ষের একটির নেতৃত্ব দেন বাঁশগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা রাতুল হাসান জাকির ও আরেক যুবলীগ নেতা মো. হারুন মিয়া। অন্যটির নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আশরাফুল হক। জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন চলে আসছিল বিরোধ। এর আগে তাদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এরই জের ধরে শনিবার রাত থেকে ঝগড়ার প্রস্তুতি নেন তারা। এরপর সকালে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাতুল চেয়াম্যান ও আশরাফুল চেয়ারম্যানের অনুসারীরা ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। যা আশপাশের তিনটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় ১০ জন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আলমকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। তিনি সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুলের অনুসারী ছিলেন। ওই সময় গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকাই পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রাতুল হাসান জাকির চেয়ারম্যান পক্ষের রুবেল মিয়া পুলিশের ভেস্ট পরে সংঘর্ষে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। ভেস্ট পরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ভেস্টটি বিগত দিনে কারাগার থেকে লুট হয়েছিল। এই বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে বাঁশগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রাতুল হাসান জাকির ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে মেসেজ পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। নরসিংদী সদর হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাহমুদুল কবির বাশার বলেন, ‘হাসপাতালে সকালে হাসপাতালে তিনজন রোগী এসেছিল। সবাই গুলিবিদ্ধ ছিল। এর মধ্যে একজনকে মৃত পেয়েছি।’ গুরুতর আহত দুজনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন্স) মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলম নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। গুরুতর আহত দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষে আহত একজনের পরনে পুলিশের ভেস্ট পরা ছিল। ওই ভেস্ট বিগত দিনে কারগার থেকে লুট করেছিল পলাতক আসামি ও সন্ত্রাসীরা। লুট ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। সংঘর্ষে নিহতদের ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি এবং থানায় মামলা হয়নি।
সূত্র: কালের কণ্ঠ