সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে সরাসরি গুম-খুনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর গোপনে গড়ে তোলা বন্দিশালা থেকে অনেক বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
এ তালিকায় রয়েছেন জামায়াতের সাবেক নেতা অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহ আমান আযমী। গোপন কারাগারে আটকে রেখে আবদুল্লাহ আমান আযমীকেও হত্যার পরামর্শও দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) প্রকাশিত ‘আফটার দ্য মুনসুন রেভ্যুলুশন-এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে র্যাবকে বিলুপ্ত করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, র্যাব-পুলিশসহ নিরাপত্তাভিত্তিক সব প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশ-র্যাবসহ অন্যান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করা হয় বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
তারা অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি বিচার বিভাগের সংস্কারের সুপারিশের কথাও জানিয়েছে। অন্তর্র্বতী সরকারকে আগামী মার্চে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অধিবেশনে সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি করতে প্রস্তাব উত্থাপনেরও পরামর্শ দিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমপক্ষে গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নিষ্পেষণমূলক হাতিয়ারের মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা পর্যায়ক্রমে বিরোধীদলীয় সদস্য, সমালোচক, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করেছে। এক্ষেত্রে বানোয়াট মামলা দেওয়া হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার এবং জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করার মধ্যদিয়ে জনগণের সামনে পুলিশের ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র্যাবে (যারা হলো পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি বাহিনী) পছন্দের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পুরস্কার দিয়ে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
তারা বলেছেন, বাহিনীতে একটি সিস্টেম দাঁড় করা হয়েছিল।
এর ওপর নির্ভর করতো রাজনৈতিক স্পন্সরশিপ এবং ঘুষের বিষয়। নিষ্পেষণের প্রণোদনা হিসেবে পুলিশকে পুরস্কার দেওয়া হতো। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতে ব্যবহার করা হতো নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার কুক্ষিগত নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর পদ্ধতিগত সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |