প্রচ্ছদ দেশজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি

১৪৪ ধারা জারি

শরীয়তপুরে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে একইস্থানে বিএনপির দুই পক্ষের বিক্ষোভ ডাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন। রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌর শহরে এ ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বুলবুল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশে বলা‌ হয়েছে, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে নড়িয়া পৌর শহরে কোন প্রকার মিছিল, মিটিং, মাইকিং কিংবা জনসমাবেশ করা যাবে না। এদিকে, ১৪৪ ধারা জারির পর সকাল থেকেই নড়িয়া পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অলিগলিতে মাইকিং করে সকলকে সতর্ক করা হচ্ছে। আইন অমান্য কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানান, সম্প্রতি পদ্মা নদীর মাঝে থাকা বালুর স্তুপ থেকে দশ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে বিক্রি করে উপজেলা প্রশাসন। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে বালু ক্রয় করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রয়েল মাঝি। তবে নিলামের শর্ত ভঙ করে কেউ কেউ স্তূপের পরিবর্তে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করছে এমন অভিযোগ করে স্থানীয় মানুষ ও বিএনপির অপর একটি পক্ষ। নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিক অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। রোববার নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুটি পক্ষ উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে। দুই পক্ষের এমন মুখোমুখি অবস্থানের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় নড়িয়া পৌর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

নিলামে বালু ক্রয় করা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রয়েল মাঝি জানান, নিলামের শর্ত মেনে নদীর মাঝে থাকা চোখ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্বার্থান্বেষী মহল প্রতি হিংসা পরায়ন হয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ায় বালু কাটার পরেও তারা কিভাবে অবৈধ বলছে? যদি শর্ত ভঙ করা হয় তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। বিএনপির অপর পক্ষের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ জিন্টু জানান, নদীর মাঝে থাকা বালুর স্তুপ নিলামে ক্রয় করা হলেও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত ড্রেজার নিয়ে নদীর তলদেশ থেকে বালু কাটছে একাধিক সংঙ্ঘবদ্ধ চক্র। এভাবে বালুকাটা হলে নদীয়ার মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত ডানতির রক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সাধারণ জনগণকে নিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিপক্ষে আন্দোলন করছি। যেই বালু তারা বৈধ প্রক্রিয়ায় ক্রয় করেছে তা কেটে নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। তবে নদীর তলদেশ থেকে এক ইঞ্চি বালু কাটতে দেয়া হবে না। নদী থেকে যতদিন পর্যন্ত সব ড্রেজার অপসারণ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল নড়িয়া এলাকায় পদ্মার মাঝে থাকা দশ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে বিক্রি করে উপজেলা প্রশাসন। নিলামের শর্ত ভঙ করে ক্রয়কৃত বালুর স্তুপের পরিবর্তে পদ্মার তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রয়েল মাঝি। এতে করে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত পদ্মার ডান তীর রক্ষা বাঁধ চোখেতে পড়ার আশঙ্কায় আন্দোলনের নামে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি ফয়সালের আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপি’র অন্য একটি পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন যাবত পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে আসছে দুইপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার এক স্থানে বিক্ষোভের ডাক দেয় দুইপক্ষ।