প্রচ্ছদ সারাদেশ আর্থিক হিসাবের বড় ঘাটতিতে অর্থপাচারের সন্দেহ

আর্থিক হিসাবের বড় ঘাটতিতে অর্থপাচারের সন্দেহ

সারাদেশ: বাণিজ্য ঘাটতিতে ভর করে বাড়ছে আর্থিক হিসাবের নেতিবাচক ভারসাম্য। বছর ব্যবধানে যা দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি থেকে সাড়ে ৭০০ কোটি ডলারে। অস্বাভাবিক এই বৃদ্ধিতে অর্থপাচারের সন্দেহ বিশ্লেষকদের। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বভাবসুলভ বক্তব্য, পরিস্থিতিতে নজর রাখছেন তারা।

অর্থনীতিতে এখন বড় দুশ্চিন্তা আর্থিক হিসাবের নেতিবাচক ভারসাম্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে যা ৮১ কোটি ডলার থেকে বেড়েছে ৭৩৫ কোটি ডলার। এর মানে হলো- বিদেশি পণ্য বা সেবা কিনতে যে পরিমাণ ব্যয় বেড়েছে, সেই অনুপাতে বাড়েনি দেশীয় পণ্য বা সেবার বিদেশে বিক্রি। স্বাভাবিকভাবেই যা চাপ তৈরি করছে সামষ্টিক অর্থনীতিতে। প্রশ্ন হলো-কেন বাড়ছে এই প্রবণতা? বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, পার্থক্য বড় হওয়ার প্রধান উপাদান ট্রেড ক্রেডিট বা বাণিজ্য ঘাটতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে যা ৯২২ কোটি ডলার। অর্থাৎ যে টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে, দেশে এসেছে সেটার চেয়ে ৯২২ কোটি ডলার কম। অথচ ১ বছর আগেও তা ছিল মাত্র ২৫০ কোটি।

বিআইবিএমের সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের প্রতিনিধিত্বমূলক অ্যাকাউন্টে বিদেশি ব্যাংকগুলো একটা সীমা দেয়। ওই সীমার আওতায় রপ্তানি আয় জমা হয়। আর আমদানি ব্যয় পরিশোধ হয়ে যায়। সেটা আমরা কত পেয়েছি, সেটাই হলো ট্রেড ক্রেডিট পরিসীমা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে ছাড় করাতে গেলে তাদের অনেক লোকসান হয়। কারণ, ৯ থেকে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট করাতে হয়। অনেক রপ্তানিকারকই পছন্দ করছেন, ১২০ দিন পর পেলে পুরো অংকের অর্থটাই পাবো।

বাণিজ্য ঘাটতি বড় হলেও সন্দেহ বাড়ে টাকা পাচারের। কারণ, বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থপাচার হয়, সেটার ৮০ শতাংশই এই মাধ্যমের। সম্প্রতি বিশেষায়িত সংস্থা বিএফআইইউয়ের রিপোর্টেও উঠে এসেছে একই প্রবণতা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই ঘাটতি কমাতে বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি ব্যবস্থা। ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ট্রেড ক্রেডিটে বেশি পরিশোধ হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি ব্যাপক বেড়েছে। এজন্যই অর্থপাচারের সন্দেহ করা হচ্ছে। পরিপ্রেক্ষিতে মেজবাউল হক বলেন, আমরা এটা তদন্ত করে দেখছি। এখানে যে পার্থক্য বাড়লো, সেটার মূল কারণ কী, খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও বছর ব্যবধানে ইতিবাচক ধারা ফিরেছে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে।