
আন্তর্জাতিক: ৪০ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের ছিনতাই করা পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি রুয়েন’ থেকে ১৭ নাবিককে উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনী। ওই সময় ৩৫ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেন। সম্প্রতি তাদের আনা হয় ভারতে। এবার এদের মধ্যে আটজনের ফরেনসিক টেস্ট করেছে ভারত। জানা গেছে বিস্তারিত তথ্য।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, ভারতে আনার পর সোমালি জলদস্যুদের শাস্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এদের অনেকেই বলছিলেন, বয়স ১৮ বছরের কম। এ কারণে মুম্বাইয়ে তাঁদের ফরেনসিক টেস্ট করা হয়।
৮ জনের ফরেনসিক টেস্ট থেকে জানা গেছে, এরা সোমালিয়ার নাগরিক। কারও বয়স ১৮ বছরের কম নয়। দুজনের বয়স প্রায় ২১। গত বুধবার এসব তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশ।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার সঞ্জয় লাটকার বলেন, ‘তাদের দাবির মুখে ফরেনসিক টেস্ট করা হয়েছে। এরপর আমরা জানতে পারি, সবার বয়স ১৮ বছরের বেশি। টেস্টের পর আবারও তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তোলা হবে আদালতেও।’
ছিনতাই করা পণ্যবাহী জাহাজ উদ্ধারের সেই রুদ্ধশ্বাস অভিযানের কাহিনী এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলছে, ৪০ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা এমভি রুয়েনের মাধ্যমে জলদস্যুদের ছিনতাইচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। এটি ভারতীয় উপকূল থেকে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা ছিল। এই অভিযানে আইএনএস সুভদ্র নামের আরেকটি ভারতীয় জাহাজও অংশ নেয়।
এই অভিযানে বেশ কয়েকটি জাহাজ, ড্রোন, আকাশযান ও ম্যারিন কমান্ডো অংশ নেয়। নজরদারি করার সময় এমভি রুয়েন নামের ওই জাহাজ শনাক্ত করে ভারতীয় নৌবাহিনী। এই জাহাজটি উদ্ধার করতে এরপর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতাকে পাঠায়। ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এটি শুক্রবার এমভি রুয়েনের কাছে যায়।
জাহাজটি গত ডিসেম্বরে ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। এমভি রুয়েনের কাছে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা যাওয়ার পর বিশেষ ড্রোন সেখানে পাঠানো হয়, নাম হাই অ্যালটিটিউড লং এনডুরেন্স। তাতে তারা নিশ্চিত হয়, এমভি রুয়েনে জলদস্যু রয়েছে। একটি ড্রোন দেখার পর গুলি চালানো শুরু করে তারা। এতে ভূপাতিত হয় ড্রোনটি।
ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, এমভি রুয়েনের ডেকে হাঁটছেন এক জলদস্যু। এরপর জাহাজ দেখে সেইদিকে বন্দুক তাক করছেন। সঙ্গে সঙ্গে গুলিও চালান তিনি।
এরপর এমভি রুয়েনের স্টিয়ারিং সিস্টেম অকার্যকর করে দিতে সক্ষম হয় আইএনএস কলকাতা। এ ছাড়া ওই জাহাজের দিকনির্দেশনা ব্যবস্থাও অকার্যকর করে দেওয়া হয়।