
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলায় এক পুলিশ সদস্যের স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলেরা। তবে মৃতের বাবার পরিবারের দাবি- তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানো হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃতের নাম রুনা খাতুন। তার স্বামী এসআই সাইফুল ইসলাম। তিনি মাগুরা সদর থানায় কর্মরত।
জানা গেছে, রুনা খান গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার নতুন বাজার রোড এলাকার কাজী গোলাম মোস্তফা টুকুর মেয়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম শালিখা উপজেলার গোপালগ্রামে ওমান প্রবাসী তাহের উদ্দিনের বাড়িতে স্ত্রী রুনা এবং দুই সন্তান রাতুল (২০), মহম্মদ আলি (১৫) ও রাতুলের স্ত্রী হৃদরিকে (১৮) নিয়ে ভাড়া থাকতেন। শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাতে তিনি মাগুরা সদর থানা এলাকায় ডিউটিতে ছিলেন। শনিবার (৬ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে বড় ছেলে রাতুল থানায় খবর দেয় তার মা গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে শালিখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রুনার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। সুরতহালে মরদেহে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
এ সময় মরদেহের অবস্থা এবং পরিবারের সদস্যদের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা থাকায় মৃতের ছেলে রাতুল, মোহম্মদ আলি ও হৃদরিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নেয়া হয়।
রুনা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে স্বামী এসআই সাইফুলের মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে রুনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তার বড় বোন সারমিন সুলাতানা সীমা। তিনি বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আমার বোন রুনা বাবার বাড়ি থেকে কোটি টাকার জমি বিক্রি করেছে। এর আগেও কয়েক কোটি টাকার জমি বিক্রি করে ছেলেদের দিয়েছে। তারপরও বোনকে তারা মেরে ফেলেছে।
মৃতের ভাই কাজী মেহেদি হাসান বলেন, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়েই গোপালগঞ্জ থেকে এসেছি। অনেকদিনই এদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। বোনের ছেলেরা মাদকাসক্ত। টাকা-পয়সা ছাড়াও নানা কারণে ছেলেরা মায়ের ওপর অত্যাচার করতো। এসব বিষয়ে বোনজামাই সাইফুলকে জানানো হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। শেষ পর্যন্ত তারা পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে।
মৃতের প্রতিবেশী মিজানুর রহমান জানান, ঐদিন রাতে বাড়িটিতে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে নারী কণ্ঠের চিৎকার শুনতে পান। পরে সেখানে গিয়ে বাড়ির গেট বন্ধ দেখেন এবং কারো কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ফিরে আসেন।
এ ঘটনায় শালিখা থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের শরীরে বেশকিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এ ঘটনায় শালিখা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।