
জাতীয়: ইউরোপীয় অঞ্চলের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা বলে যে, তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য খাবারে কোনো শর্করা বা মিষ্টিজাতীয় উপাদান মেশানোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। অন্যান্য অঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে কোনো নির্দেশিকা তৈরি করা হয়নি। গবেষকেরা বলছেন যে, ইউরোপীয়দের জন্য এই নির্দেশিকা বিশ্বের অন্যান্য অংশের জন্যও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
ওজন বৃদ্ধি এবং দাঁতের ক্ষয়সহ বেশ কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে চার বছরের কম বয়সী শিশুদের অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। মার্কিন সরকারের নির্দেশিকায় দুই বছরের কম বয়সীদের জন্য অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় এড়ানোর পরামর্শ রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড অ্যাকশন নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় লেখা প্রতিবেদনে পাবলিক আই বলেছে যে, বাজার গবেষণা সংস্থা ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী খুচরা বাজারে ১২০ কোটি ডলারের সেরেলাক বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। শুধু ব্রাজিল এবং ভারতেই বিক্রি হয়েছে ৪০ শতাংশ সেরেলাক।
আন্তর্জাতিক বিধি অমান্য করে গরিব দেশে শিশুদের দুধে চিনি মেশাচ্ছে নেসলেআন্তর্জাতিক বিধি অমান্য করে গরিব দেশে শিশুদের দুধে চিনি মেশাচ্ছে নেসলে গবেষকেরা খুঁজে পেয়েছেন যে, সেনেগাল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছয় মাস বা তার বেশি বয়সী শিশুদের জন্য বিক্রি করা বিস্কুট স্বাদের প্রতিটি সিরিয়ালে ৬ গ্রাম চিনি মেশানো হয়েছে। কিন্তু সেই একই পণ্য সুইজারল্যান্ডে বিক্রি হয় না। ভারতে বিক্রি হওয়া সেরেলাকে গড়ে ২.৭ গ্রাম অতিরিক্ত চিনি মেশানো হয়েছে।
ব্রাজিলে বিক্রি হওয়া সেরেলাক মুসিলনের আটটি পণ্যের মধ্যে দুটিতে চিনি নেই। তবে বাকি ছয়টিতে প্রায় ৪ গ্রাম করে চিনি রয়েছে। নাইজেরিয়ায় বিক্রি হওয়া শিশুখাদ্যে গড়ে ৬ দশমিক ৮ গ্রাম পর্যন্ত বাড়তি চিনি পাওয়া গেছে।
এই বিষয়ে ডব্লিউএইচওর মেডিকেল অফিসার ডা. নাইজেল রলিন্সের মত, ‘পাবলিক আইয়ের প্রতিবেদনে (নেসলের) দ্বিমুখী নীতি প্রকাশ পেয়েছে—যা মেনে নেওয়া যায় না।
নেসলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা শিশুদের জন্য আমাদের পণ্যগুলোর পুষ্টির গুণগতমানে বিশ্বাস করি এবং শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চমানের উপাদানগুলোকে অগ্রাধিকার দিই।
তিনি আরও বলেছেন, ‘শিশু খাদ্য অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। নেসলে সব সময়ই স্থানীয় বিধান ও আন্তর্জাতিক মানের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করে। রেসিপির তারতম্যগুলো সাধারণত স্থানীয় বাজারে উপাদানগুলোর প্রাপ্যতাসহ বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে।
নেসলে কোম্পানি গত এক দশকে বিশ্বব্যাপী শিশু খাদ্যে শর্করার মোট পরিমাণ ১১ শতাংশ কমিয়েছে বলেও জানান এই মুখপাত্র।
তিনি আরও বলেন, ‘চিনির পরিমাণ আরও কমানোর জন্য কাজ চলছে। বিশ্বব্যাপী বাচ্চাদের জন্য দুধ থেকে সুক্রোজ এবং গ্লুকোজ সিরাপ বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।