প্রচ্ছদ জাতীয় শিবির আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ ছাত্রলীগ কর্মীর

শিবির আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ ছাত্রলীগ কর্মীর

ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় হওয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ এবং পরবর্তীতে হলে দেখা গেলে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক কর্মী।

বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রিত এক মেসেঞ্জার গ্রুপে এই হুমকি দেওয়া হয়। গেস্টরুম এবং ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করার অভিযোগে এমন হুমকি দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত জুলকারনাইন মাহিন বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী। হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়সাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিরুল ইসলাম সাকিব এবং গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাকিবুল সুজন এই গ্রুপটি নিয়ন্ত্রণ করেন। তাদের নির্দেশেই মূলত গেস্টরুম হয়। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

অভিযোগ উঠেছে, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিরুল ইসলাম সাকিবের নির্দেশেই মাহিন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে এই নির্দেশনা দিয়েছে।

এই গ্রুপের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয় একাত্তর হলে তানভীর হাসান সৈকতের যে তিনজন শীর্ষ পদ প্রত্যাশী আছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে উগ্র এবং বদমেজাজি শাকিরুল ইসলাম সাকিব। কর্মীদের সাথে তিনি ভালো এবং নম্র ব্যবহার ত দূরে থাক উল্টো যেকোনও সাধারণ বিষয়েও রূঢ় আচরণ করেন। মোটামুটি সব কর্মীই ক্ষুব্ধ এই সাকিবের ওপর।

বিজয় একাত্তর ছাত্রলীগের সৈকতের অনুসারীদের অভ্যন্তরীণ গ্রুপে এমন নির্দেশনা সংক্রান্ত স্ক্রিনশট দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে। এই নির্দেশনায় আমজাদ মিয়াজি এবং ইফতেখারুল হুদা মজুমদারকে নামের দুই শিক্ষার্থীকে মেনশন করে জুলকারনাইন মাহিন লিখেন, ‘আজ থেকে আপনাদের দায়িত্ব আর আমরা নিব না। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকায় আপনাদের শিবির হিসেবে ধরে নেওয়া হলো। আজকের পর আপনাদের হলে দেখা গেলে পরিণতি খারাপ হবে।’

এ ছাড়া গেস্টরুমে অংশ না নেওয়ায় রিয়াজ ও রাহাত নামের দুই শিক্ষার্থীর ট্রাঙ্ক ফেলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন জুলকারনাইন মাহিন ও কৌশিক হাসান পরশ নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ১১টা ১৫ মিনিটে গ্রুপে ম্যাসেজ দেওয়া হয় সাড়ে ১১টার মধ্যে বাধ্যতামূলক মিনি গেস্টরুমে থাকতে হবে। তখন অনেকেই কাজে ব্যস্ত ছিল। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আমাদের ব্যাচমেট রিয়াজ উদ্দিন এবং রাহাত দুই শিক্ষার্থীর ট্রাঙ্ক ফেলে দেওয়ার নির্দেশনা দেন জুলকারনাইন মাহিন ও কৌশিক হাসান পরশ ভাই। তাদের ট্রাঙ্কে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সার্টিফিকেট ছিল। আর দুইজনকে সরাসরি শিবির আখ্যা দিয়ে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত জুলকারনাইন মাহিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, শুধুমাত্র ভয় দেখানোর জন্য এই মেসেজ দিয়েছি। আমরা তাদের বের করব কেন, তারা আমাদের ছোট ভাই। আর ট্রাঙ্ক পেলে দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। এখন একটা মিটিংয়ে যাচ্ছি। মিটিং শেষ করে আমি এটার খোঁজ নেব।