প্রচ্ছদ হেড লাইন সেলুনে বৈদ্যুতিক শক, মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় হাতুড়িপেটা

সেলুনে বৈদ্যুতিক শক, মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় হাতুড়িপেটা

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগে হাবিবুর রহমান রুবেল (৩৫) নামে এক যুবকের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, আপন চাচাতো ভাইয়ের হাতে খুন হয়েছেন রুবেল। হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘণ্টা পর অপরাধী মো. মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ। শনিবার (৪ মে) দুপুরে খিলগাঁও থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত জানান মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান। ডিসি হায়াতুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলির প্রশান্তি মাদকাশক্তি নিরাময় কেন্দ্রের বিপরীত পাশের গলিতে হাত-পা বাঁধা তোশক মোড়ানো বস্তাবন্দী রুবেলের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন ও নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার লাশটি শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে লাশের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরে নিহতের মা মিনু বেগম ওইদিন খিলগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর খিলগাঁও থানা পুলিশ এ মামলার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। পরে সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মো. মনির হোসেনকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্লুলেস এ মামলায় ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন ও আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মনির হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি হায়াতুল বলেন, যেখানে মরদেহ পাওয়া যায়, তার পাশেই মনির হেয়ার স্টাইল নামে একটি সেলুনের দোকান আছে। নিহত রুবেল মনিরের চাচাতো ভাই। তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেখানে জমি ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রুবেলের বিরুদ্ধে মাদকসহ চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তার কোনো পেশা নেই।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রায় দুমাস আগে রুবেল হুমকি দিয়ে মনিরের কাছে টাকা দাবি করেন এবং ১৫ দিন সেলুন বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন। পরে রুবেল ১২ হাজার টাকা নিয়ে সেলুন খুলতে দেন। এই ঘটনা ও জমির পূর্ব বিরোধের জেরে মনির রুবেলের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তিনি রুবেলকে শায়েস্তা করতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। গত বুধবার (১ মে) রাত ১১টার দিকে রুবেল মনিরের দোকানে চুল কাটার জন্য যান। মনির তখন সব কর্মচারীকে ছেড়ে দিয়ে রুবেলের চুল কাটতে শুরু করেন। চুল কাটার ফাঁকে সুযোগ বুঝে মনির রুবেলের ঘাড়ে বৈদ্যুতিক তারের শক দেন। এতে রুবেল অচেতন হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করতে সেলুনে থাকা হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন মনির।

ডিসি হায়াতুল ইসলাম বলেন, মৃত্যু নিশ্চিত করে মনির দোকানের শাটার বন্ধ করে মেরাদিয়া থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে একটি তোশক ও দড়ি কিনে আনেন। এরপর তার দোকানে থাকা একটি বস্তায় রুবেলকে ভরে তোশকে পেঁচিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এরপর ভ্যান খুঁজতে থাকেন, ভ্যান না পেয়ে একটি অটোরিকশা নিয়ে আসেন। অটোরিকশা চালক বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কৌশলে পালিয়ে যান। তখন তিনি একাই মরদেহটি কিছুদূর টেনে নিয়ে ফেলে যান৷ তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার মনিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেলুন থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তার, হাতুড়ি ও নিহত রুবেলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।