সারাদেশ: খুলনায় বিয়ের আশ্বাসে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি হওয়ার পর হাসপাতালের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীকে। এর কয়েক ঘণ্টা পর তিনি ধর্ষণের অভিযোগ তুলে নেন।
প্রভাবশালীদের ভয়ে নাকি অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী, তা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে আছেন বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের চাপ এবং প্রশাসনের উদাসীনতায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি তাদের।
খুলনায় ধর্ষণ ও অপহরণের শিকারের অভিযোগকারী সেই তরুণী শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। তখন তরুণীর পরিবার চিকিৎসকদের কাছে অভিযোগ করেন, সন্ধ্যায় ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন।
তবে নাটকীয়তা শুরু হয় রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিকেল থেকে। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বের হলে হাসপাতাল গেট থেকেই কয়েকজন লোক জোর করে ভুক্তভোগীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নেয়, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই গাজী তৌহিদ।
এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর যশোরের কেশবপুরে মাইক্রোবাসটির সন্ধান মেলে। তখন তাদের কাছে সময় সংবাদের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয় কীভাবে কাদের সঙ্গে কেনই বা এখানে এই ভুক্তভোগী। কিন্তু নিশ্চুপ ভুক্তভোগী বা স্বজন কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি। রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই কলেজছাত্রী ও তার মা সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির হয়ে দাবি করেন, ধর্ষণ বা অপহরণ করা হয়নি। তাহলে কেন গিয়েছিলেন হাসপাতালে? জানতে চাওয়া হলে কোন উত্তর মেলেনি। পরে রাত ১২টার দিকে ওই (যশোর যাওয়া) মাইক্রোবাসে করেই বাড়িতে যান তরুণী।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অনেকটা পাশ কাটানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনায় কোনও কারণে ভুক্তভোগী অভিযোগ না করলে পুলিশ কি চুপ থাকবে, এমন প্রশ্নে কৌশলী উত্তর দেন তিনি। বলেন, ‘এটা আমাদের নজরে আছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। পরবর্তীতে আপনাদের আমরা জানাবো।’
তবে প্রভাবশালী মহলের চাপ এবং প্রশাসনের উদাসীনতাকে দোষারোপ করে বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন অপরাধ বিশ্লেষক থেকে শুরু করে মানবাধিকার কর্মীরা।
এ বিষয়ে খুলনার মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, পুনরায় তাকে যখন থানায় আনা হয় তখন তার বক্তব্য শুনলেই বুঝা যায় ভয়-ভীতি দেখিয়ে এবং শেখানো কথা সে বলছে।
অপরাধ বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, ভুক্তভোগী এবং তার স্বজনদের অভিযোগ থেকে সরে আসা, পুরো বিষয়টির মধ্যে রহস্য রয়েছে। আমাদের মনে হয় স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের চাপ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে অবহেলা গাফিলতি রয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল একজনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |