
সারাদেশ: খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও সিনথিয়া ইসলাম তিশা দম্পতি ইস্যুতে সরব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তিশা (১৮) ও তার স্বামী ৬০ বছর বয়সী মুশতাকের বিয়ের ইস্যুতে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) একটি জাতীয় দৈনিকের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম। যেখানে তিনি তার মেয়ে তিশাকে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ের অভিযোগ করেন মুশতাকের বিরুদ্ধে। তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এটাকে আমি বিয়ে বলি না। এটাকে বিয়ে বললে ভুল হবে। তাকে (তিশা) ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। একটি অশ্লীল ভিডিওর মাধ্যমে জিম্মি করে তাকে বাধ্য করে কাবিননামায় স্বাক্ষর করানো হয়েছে। আমার মেয়ে তিশা মেডিকেল বোর্ডের সামনে জবানবন্দি দিয়েছে। সে বলেছে যে, তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে। অশ্লীল ছবি ও ভিডিও করে তাকে কাবিননামায় স্বাক্ষর করতে বলে। সে রাজি না হলে তাকে বলে এগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে, টিসি দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে। সে (মুশতাক) কাবিননামায় স্বাক্ষর নিয়ে এখন এটাকে বিয়ে হিসেবে চালিয়ে দিয়েছে।’
তিশার বাবার এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয় তিশা-মুশতাক দম্পতি। এ সময় মুশতাক তিশার বাবার অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘একটি মেয়ের বয়স যখন ১৮ হয়ে যায় তখন তার নিজের বিয়ের সিদ্ধান্ত সে নিতে পারে। আমি যখন তাকে (তিশাকে) বিয়ে করি তখন তার সার্টিফিকেট ও জন্ম সনদ অনুযায়ী বয়স ছিল ১৮ বছর এক মাস। আমার কাছে সবগুলো কাগজপত্রসহ প্রমাণ আছে।’ তিশার বয়সের ইস্যুতে মুশতাক বলেন, আমি যেদিন তাকে বিয়ে করি, সেদিন তার বয়স ছিল ১৮ বছর ১ মাস। তার সার্টিফিকেটে বয়স দেয়া ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫। কিন্তু ওনাকে (তিশার বাবাকে) টকশোতে যখন তার জন্ম তারিখ জিজ্ঞাস করল, তখন তিনি বললেন ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪। এটিই তার সত্যিকারের জন্ম তারিখ। কিন্তু ১ বছর কমিয়ে তাকে স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে। সাইফুল ইসলামের করা মামলার প্রসঙ্গে মুশতাক বলেন, যখন তিনি (তিশার বাবা) মামলা করতে গেছে, তখন তিনি বয়স দিয়েছে ১৬ বছর। তার মানে তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন, ভুল তথ্য দিয়েছেন। মিথ্যা তথ্য দিয়েই তিনি আমাদের নামে মামলা করেছেন। মামলার পর আমি এবং তিশা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে ঠাকুরগাঁও গিয়েছিলাম।
‘মামলার পরবর্তীতে তিশা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তার জবানবন্দিতে বলেছে, স্বেচ্ছায়-সজ্ঞানে আমি খন্দকার মুশতাক আহমেদকে বিয়ে করেছি। আমি তাকে ভালোবাসি এবং আমি নিজ ইচ্ছায় যেতে চাই। তখন ম্যাজিস্ট্রেটে অনুমতি দেয় তিশাকে ঠাকুরগাঁওয়ে যাওয়ার। তিশা আদালত থেকে বের হয়েও আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা জানায়। এখানে জোর-জবরদস্তি কিছুই নেই।’- যুক্ত করেন মুশতাক। তিশার অশ্লীল ভিডিওচিত্র প্রসঙ্গে মুশতাক বলেন, আমি তো আমার কথা বলবো, যে আমি করি নাই। তিশা আপনাদের সামনে উপস্থিত। বলা হচ্ছে তাকে জিম্মি করে রেখেছি। আমরা বাংলাদেশের সব জায়গায় যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা সবচেয়ে বেশি ওপেন। আমরা স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারছি না। যেখানেই যাচ্ছি মিডিয়া আছে। তাহলে আমি কীভাবে তাকে জিম্মি করে রেখেছি আমি বুঝি না।। মুশতাক আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ- আমি নাকি তাকে (তিশাকে) নেশাদ্রব্য খাইয়ে এমন অবস্থায় রেখেছি যে আমি যা বলি তাই নাকি তোতা পাখির মতো সে বলছে। আমার জীবনে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি আমি চা, সিগারেট, পান এগুলো খাই না। অন্যান্য নেশাদ্রব্য তো প্রশ্নেই ওঠে না।’ শ্বশুরকে চ্যালেঞ্জ করে ডোপ টেস্ট করতেও রাজি আছেন মুশতাক। নেশা ইস্যুতে স্ত্রী তিশাসহ ডোপ টেস্ট করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। অবশ্য, এর আগে শ্বশুরকে ধন্যবাদ জানাতেও ভুলেননি মুশতাক। ধন্যবাদের কারণ হিসেবে বলেন, তার জন্যই আমি তিশাকে পেয়েছি। তিনি জন্ম দিয়েছেন বলেই তিশা আজ আমার স্ত্রী।