প্রচ্ছদ সারাদেশ প্রভাবশালী ও দুর্জনদের কাছে এক আতঙ্কের নাম শামসুজ্জাহান কনক

প্রভাবশালী ও দুর্জনদের কাছে এক আতঙ্কের নাম শামসুজ্জাহান কনক

সারাদেশ: বিশ্ব নারী দিবসে আলোড়ন সৃষ্টিকারী নারী কর্মকর্তা শামসুজ্জাহান কনকের ব্যাপারে জানা যাক। যিনি আড়াইহাজারে ভূমি অফিসে চালকের আসনে বসে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নজির স্থাপন করেছেন। নারী বলে ভয়ভীতি-তদবিরের মাধ্যমে অনিয়ম করা তার উপস্থিতিতে একেবারেই অসম্ভব। তাকে দেখে এখন স্থানীয় নারীরা বলছেন, আমরা নারী তবে আমরা শুধু ঘরে নয় প্রশাসনেও পারি। স্থানীয়দের মতে, তিনি আড়াইহাজারে যোগ দেওয়ার পর থেকে সব অনিয়ম দূর হয়েছে। তার কঠোর অনুশাসনে ভূমি অফিসের দালালচক্রের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন সেবাগ্রহীতারা। এভাবেই সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় আর প্রভাবশালীদের কাছে জাঁদরেল হয়ে উঠেছেন।

ভূমি অফিসে আসা সেবাগ্রহীতারা জানান, তিনি সব রকম ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করেন। কারো সাতে-পাঁচে না গিয়ে ভূমি অফিসকে জনবান্ধব অফিস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে প্রশংসা অর্জন করছেন। শামসুজ্জাহান কনক ৩৬ তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার। তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলা সদরের বিনোদপুর ইউনিয়নে। পড়াশোনা শেষ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে। ২০২৩ সালের ১৪ জুন তিনি আড়াইহাজার উপজেলায় যোগ দেন। তারপর থেকেই আড়াইহাজার ভূমি অফিসে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং কাজে গতি সঞ্চার হয়।

জানা গেছে, এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক মিসকেসের ব্যাপারে নির্ভয়ে রায় দেন। তিনি কোন প্রকার ভয়-ভীতির তোয়াক্কা করেন না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে দ্রুত মিসকেস নিষ্পত্তি করেন। কাগজপত্র দেখে সঠিক নামজারি করে দেন। এখন আড়াইহাজার উপজেলায় দুই পৌরসভা ১০ ইউনিয়নের ৩১৬ গ্রামের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা ভূমি অফিস। আগের চেয়ে পরিচ্ছন্ন ও গোছানো অফিসে কাজও হয় দ্রুত গতিতে। গ্রামের কৃষকরা জানান,‘আগে ভূমি অফিসে আমরা ঢুকতে পারতাম না। দালালরা কইতো স্যারে তোমাগো মতন মানুষের সাথে কথা কইবো না। কি সমস্যা আমাগো কও। যা লাগে খরচ দিবা কাম কইরা দিমু। এরপর টেকা নিয়াও দালালরা খালি ঘুরাইতো। অহন ম্যাডাম আমাগো লগে কথা কয়। সমস্যা সমাধান কইরাও দেন।’এদিকে, আড়াইহাজার উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক যোগদানের পর ৯ মাসে কর্মতৎপরতা দেখিয়ে সকলের মনজয় করে নিয়েছেন। তবে ভূমি অফিসের দুর্জনদের কাছে তিনি এক আতঙ্ক। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলে তিনি সেই বিষয়টি বাতিল করে দেন। সঠিক কাগজপত্র বুঝে পেলে তবেই সমস্যার সমাধান করে দেন। প্রভাবশালী লোকজন তার ওপর এসব কারণে নাখোশ। এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলার দু’একটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ করা হলে তিনি তা শক্তহাতে প্রতিহত করেন। অবরোধের সময় তিনি নিয়মিত টহল দিয়েছেন গাড়ি ও যৌথ বাহিনী সাথে নিয়ে। এবারের এসএসসিও দাখিল পরীক্ষায় কড়াভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি এখানে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ, মাদকের স্পট ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বিষয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। আড়াইহাজারে এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক বলেন, আমি সেবার মান বাড়াতে চাই। জনগণকে সেবা দিতে চাই। নেতিবাচক কাজ আমি কেন, কেউ পছন্দ করেন না। অপছন্দনীয় কাজ কেউ করলে সেই বিপদে পড়বে। আমরা মানুষকে তাদের কাঙ্খিত সেবা দিতেই আগ্রহী।